মঙ্গলবার, ০২ মার্চ ২০২১, ১১:১০ পূর্বাহ্ন
একচালা একটি টিনের ঘর। বাহির থেকে চোখ দিয়ে থাকালে মনে হত কারো পুরাতন আমলের একটি বসত বাড়ী। বুঝার তেমন কোন উপায় ছিল না মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবীর জেনারেল আতাউল গণি ওসমানীর নামে এটি একটি জাদুঘর। যে যৌবন নিয়ে যুদ্ধে নেমে সিলেটের ওসমানী মক্তিযুদ্ধের বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন, সেই যৌবনের মত উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে তাঁর নামে প্রতিষ্টিত এই জাদুঘরে। সন্ধ্যা বেলায় ওসমানী জাদুঘর এখন আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে। সিলেটের একমাত্র এই জাদুঘর এখন দেখতে মনে হয় যেন এ এক অপরুপ নাদনিক বাড়ী।
সিলেট নগরীর নাইওরপুলে অবস্থিত ওসমানী জাদুঘর। সিটি কর্পোরেশন নগরীর চলমান উন্নয়নের কাজের জন্য ওসমানী জাদুঘরের পুরনো সীমানা দেয়াল ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। সেই সাথে তারা নগরীর সৌন্দর্যবর্ধনের অংশ হিসেবে নির্মাণ করেছে নান্দনিক ডিজাইনের একটি গেট। নানা কারুকার্য দিয়ে রাস্তার পাশে সিসিক তৈরী করে দিয়েছে সীমানা দেয়াল। সব মিলিয়ে নতুন গেট আর ডিজাইন দিয়ে নির্মিত দেয়ালের কারণে ওসমানী জাদুঘরে যেন লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। এখন দিনের বেলায়ও দেখতে মনোরম লাগে এই জাদুঘরটি। আর সন্ধ্যা বেলা যখন নানা রকমের বাতি দিয়ে প্রজ্বলিত করা হয় তখন দর্শনার্থীদের মাঝে লাগে এক অন্যরকম অনুভূতি।
জাদুঘর সুত্রে জানা গেছে, নতুনভাবে নির্মিতি গেটের আনুষ্টানিক উদ্ভোধন করবেন সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। তবে দিন-তারিখ এখনো ঠিক করা হয়নি।
ওসমানী জাদুঘরের সহকারী সংরক্ষক মো. জিয়ারত হোসাইন খান সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সিটি কর্পোরেশনের এই উন্নয়ন ছাড়াও সরকারীভাবে জাদুঘরটিতে এক বছরে ব্যাপক উন্নয়ন করা হয়েছে। এসব উন্নয়নের ফলে সিলেটের একমাত্র এই জাদুঘরে পূর্বের তুলনায় বেড়েছে অনেক দর্শনার্থী।
ওসমানী জাদুঘরে দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। দর্শনার্থীদের জন্য ফ্রি ইন্টারনেট ব্যবস্থাও রাখা হয়েছে। জাদুঘরের সামনের খোলা জায়গায় লাগানো হয়েছে নতুন নতুন ফুল গাছ। নতুন ফুল গাছে সজ্জিত করা হয়েছে পুরো সামনা। এক চালা টিনের ঘরের উপর লাল রঙ দিয়ে অনেকটা নতুনত্বের আবহ তৈরী করা হয়েছে।
এছাড়া আরসিসি ঢালাই দিয়ে একটি রাস্তা নির্মাণ করা হয়েছে। বসানো হয়েছে কাঁটাতারের বেড়াও। আর এই উন্নয়নে সরকার ব্যয় করেছে ২৬ লাখ টাকা।
সপ্তাহের রবি, সোম, মঙ্গল ও বুধবার সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত খোলা রাখা হয় এটি। আর শুক্র ও শনিবার বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে সাড়ে ৫টা পর্যন্ত খোলা থাকে জাদুঘরটি। প্রতি বৃহস্পতিবার থাকে বন্ধ।
মুক্তিযুদ্ধের এ সর্বাধিনায়কের বাড়ী সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলায়। তাঁর মৃত্যুর পর স্মরণীয় করে রাখতে এই জাদুঘরটি নির্মাণ করা হয়েছিল। তাঁর জীবদ্ধসায় ব্যবহিত অনেক জিনিষপত্র সংরক্ষিত আছে জাদুঘরটিতে। রয়েছে নানা রকমের বইপুস্তক। সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে এই জাদুঘরের কয়েকটি পদে কাজ করেন ৯জন লোক।